রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন
মাসুদ রানা: সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর্ন্তজাতিক আদালতে দেশের পক্ষে রায় মায়ানমারের বিরুদ্ধে সমুদ্র বিজয়ের বাংলাদেশের বিরাট সাফাল্য অর্জন মিয়ানমারের কাছে যেন এক ইর্ষানীয় অধ্যায়। তের লাখ রোহিঙ্গা উদবাস্ত খড়গ হয়ে আমাদের ঘাড়ে ঝুলছে। আদৌ তাদের ফিরিয়ে নেয়া হবে কিনা তাতে বেশ সন্দেহ রয়েছে। এ বিজয় দুটি মায়ানমার সহ কিছু দেশ মনেপ্রানে মেনে নিতে পারেনি।
যে কারণে তারা এ দেশটির ক্ষতি সাধনে যুদ্ধাপরাধীদের লালন ও মাদকের বিষাক্ত ছোবল দিয়ে উঠতি বয়সের তরুণ তরুনীদের ও যুব সমাজকে বিপদগামী করছে। এর ছোবল থেকে মঠবাড়িয়াও রেহাই পায়নি। কিছুদিন আগেও মানুষ বুঝতো না ইয়াবা কি? এর প্রচার ব্যাপক সরবরাহের কারণে সকল পর্যায়ে মানুষের মুখে মুখে একটি পরিচিত আতংকিত নাম।
ইয়াবা এটি একটি থাইল্যান্ডি ভাষা যার অর্থ উদভ্রান্ত বা পাগল। ২য়বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানের হিটলার তার নাৎসী বাহিনীকে সর্বদা উজ্জীবিত রাখতে এ ট্যাবলেটটি তৈরী করেছিলেন। এটি মিডিয়ার কিছু অহেতুক নিউজেও সস্তা প্রচার পেয়েছে। পাশ্ববর্তী দেশ বার্মা যে হারে আমাদের যুব সমাজের ওপর প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে নাফ নদী দিয়ে দেশে ইয়াবা ঢুকাচ্ছে তাতে আমরা খুব শীগ্রই সিংহের জাতি থেকে লেজ গুটানো শিয়ালের জাতিতে যেন পরিণত হতে যাচ্ছি। এ ভয়াবহ অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে হলে শুধু আইন প্রয়োগ করেই এর সমাধা হবে না।
আমি মনে করি সরকারকে নিকোটিন মুক্ত এমন কিছু বিকল্প তৈরী করা উচিত যা সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সাথে সাথে প্রত্যেক অভিভাবককে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মঠবাড়ীয়া এলাকাটি উপকূলীয় একটি জোন কেন্দ্রীক এলাকা। এখানে পার্শ্ববর্তী পাথরঘাটা, বরগুনা, বামনা, শরণখোলা ভান্ডারিয়া এলাকার আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা অত্র এলাকায় বাস করা ডাকাতদের যোগসাজোসে ডাকাতি করে আবার পালিয়ে যায়। এদের অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেপ্তার করায় ডাকাতির প্রবণতা কমে গেছে।
বর্তমানে মাদক যেন এক মহামারী আকার ধারণ করেছে। অফিসার ইনর্চাজ সৈয়দ আব্দুল্লাহ ইতোমধ্যে সাঁড়াশী অভিযান চালিয়ে তাদের দুর্গে বড় ধরণের আঘাত হেনেছেন। ডিলার ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার করে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। ২৫৩ বর্গ কিলোমিটার ও প্রায় পাঁচলক্ষ জনগনের মঠবাড়িয়া উপজেলায় একটি পৌরসভা সহ ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে বিশাল এলাকা যাতে মাত্র ২টি পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে তুষখালী ও ভগিরথপুর। সর্বমোট থানা সহ এতে পুলিশ সংখ্যা রয়েছে ৮৬ জন, গাড়ী একটি। এলাকার পরিধি ও দূর্গম পথ হিসেবে ৪ টি গাড়ীর প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন কারণে ২৩ সদস্য নিরাপত্তার ডিউটি পালন করতে পারছে না। আনুপাতিক হারে ৫৮১৩ জনের নিরাপত্তায় ১জন পুলিশ।
অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনতে সাপলেজা গুলিশাখালী, মাছুয়া পুলিশ ফাঁড়ি দরকার। পুলিশ সদস্যদের সার্বক্ষণিক থানা অবস্থান করতে থানা ভবন আরো সম্প্রসারণ দরকার। তিনি যে দিন থেকে যোগদান করেছেন সেদিন থেকে থানায় একটি নিয়ম চালু করেছেন যে কোন ধরনের অপরাধীকে লকাবে ডুকান এবং কোন সুপারিশের তোয়াক্কা না করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। সামনে ১৮ জুন উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলা বাহীনিকে সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে এবং ভোট কেন্দ্রে কাউকে গায়ের জোরে সিল মেরে ভোট ডাকাতি করতে দেয়া হবে না।
হাদিস শরীফে এসেছে দুটি চোখ জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা, যে চোখ সারারাত আল্লাহর ভয় নিরবে অশ্রু বিসর্জন করে ও অপরটি মানুষের জানমাল নিরাপত্তায় ঘুমকে বিসর্জন দেয়। অফিসার ইনর্চাজ সৈয়দ আব্দুল্লাহ্ বলেন নিরাপত্তা ও মাদক নিয়ন্ত্রনে প্রয়োজন পৌরসভা সহ প্রত্যেক ইউনিয়নে ৫ জন করে ২৪ ঘন্টা পুলিশ পেট্রোল ডিউটি করবে।
তাতে আরও ৭০ জন অফিসার সহ ১৫০ পুলিশ সদস্য দরকার। মঠবাড়িয়ার মানুষ একটি ব্যতিক্রমধর্মী, সাহসী ও প্রতিশোধ পরায়ন। এ অঞ্চলের পূর্ব পুরুষরা এক সময়ে বাঘ কুমিরের সাথে যুদ্ধ করে বসতি স্থাপন করেন। যে কারণে তার কিছু উত্তরসূরীরা জিঘাংসা পরায়ন হয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে আইন হাতে তুলে নিচ্ছে বিধায় হত্যা সহ অন্যান্য অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর মাদকের বিষয় সরকারকে মূল যায়গায় আরও কড়া নজরদারী বাড়াতে হবে।
Leave a Reply